Categories: Bangladesh News

কয়েক হাজার বাংলাদেশি কর্মীতে ঠাসা কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর


আগামী ১ জুন থেকে বিদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। হাতে অল্প সময় থাকায় জরুরিভিত্তিতে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে কর্মী পাঠানো হচ্ছে। এক সঙ্গে অনেক কর্মী প্রবেশ করায় কোম্পানিগুলো যথাসময়ে কর্মীদের রিসিভ করছে না। এতে চাপ পড়েছে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে। এখন কয়েক হাজার বাংলাদেশি কর্মী বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন। মালয়েশিয়া সরকার এজন্য চাপ কমাতে ইমিগ্রেশন বিভাগের জনবল বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি অপেক্ষমাণ কর্মীদের জন্য খাবার এবং পানির ব্যবস্থা করতে বলেছে।

সিলেটের আলামিন ৩ মাস ধরে অপেক্ষায় আছেন কবে তার ভিসা আসবে এবং তার পর ফ্লাইট ঠিক হবে। এদিকে মালয়েশিয়া সরকারের কর্মী নেওয়া বন্ধ ঘোষণায় বেশ চিন্তিত ছিলেন। ধারণা করছিলেন যে পাঁচ লাখ টাকা বোধহয় জলেই যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে বিশেষ ফ্লাইট ব্যবস্থা করায় তিনি মালয়েশিয়া পৌঁছাতে পেরেছেন। তবে এখনও অপেক্ষা করছেন বিমানবন্দরে। তার অভিযোগ ৮ ঘণ্টা হলেও কোম্পানির কেউ তাকে রিসিভ করতে আসেনি। তার সঙ্গে অপেক্ষমাণ আছে আরও কয়েক শ’ কর্মী।

বিমানবন্দর থেকে আলামিন জানান, কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে এই মুহূর্তে কয়েক হাজার বাংলাদেশি আটকা পড়ে আছে। তাদের ইমিগ্রেশন কখন হবে কেউ বলতে পারছেন না। শেষ মুহূর্তে অনেক কর্মী মালয়েশিয়া আসছে।

অপর এক কর্মী অভিযোগ করে বলেন, ফ্লাইট আসছে ৬-৭ ঘণ্টা হয়ে গেছে। এখনও কেউ রিসিভ করতে আসেনি। যার কারণে ইমিগ্রেশন করা যাচ্ছে না। এখানে অনেক বাংলাদেশি আছে যাদের একই অবস্থা।

মালয়েশিয়ার অধিকারকর্মীরা বলছেন, কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে কম দক্ষ এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসী শ্রমিকে উপচে পড়েছে। দুবাই, কলম্বো, হংকং ও ব্যাংককের মতো বিশ্বের দূর-দূরান্তের ট্রানজিট গন্তব্যসহ সব ধরনের বৈধ চ্যানেলে শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়ায় আসছেন এসব কর্মী। আগামী ৩১ মে সরকার অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় প্রবেশের সময়সীমা বেধে দেওয়ার আগেই আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি দামে টিকিট কিনতে হয়েছে তাদের।

এদিকে অভিবাসী শ্রমিক অধিকার বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি হল এই শ্রমিকদের কল্যাণ এবং তাদের চাকরি আছে কিনা তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নিশ্চিতভাবে এই শ্রমিকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মালয়েশিয়ায় জোরপূর্বক শ্রমের জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের পাচারকারী-অপরাধী সিন্ডিকেটের শিকার, যাদের দেশে প্রবেশের গড় খরচ সম্প্রতি জনপ্রতি ৬ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত বেড়েছে। এই শ্রমিকদের অনেকেই আধুনিক দাসত্বের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে এবং দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা, সংস্থা এবং নিয়োগ মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় ভুয়া কোটায় ভুয়া নিয়োগকর্তাদের কাছে আসবে যেখানে কোনও চাকরি নেই।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অভিবাসী ব্যবস্থাপনা এখন স্পষ্টতই ভেঙে পড়েছে। বিচারহীনতা, দুর্নীতি ও আইনের শাসন নেই। ভুক্তভোগী বাড়ছে, আধুনিক দাসত্বের ঝুঁকিও বাড়ছে।

এদিকে এমন অবস্থায় মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে সেদেশের সরকার। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ পরিস্থিতি নিরসনে কাজ করছে। বিমানবন্দরের এক এবং দুই নম্বর টার্মিনালে বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা উপচে পড়ছে। ৩১ মে সময়সীমার মধ্যে নিয়োগকর্তারা শেষ মুহূর্তে কর্মীদের নিয়ে আসছে এদেশে। এই কারণে এমন সংকট তৈরি হয়েছে। এই কর্মীদের অবশ্যই মালয়েশিয়ায় প্রবেশের আগে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে এবং তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে হবে।

ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, অন্যান্য সময় বিমানবন্দরে ৫০০ থেকে ১০০০ বিদেশি কর্মী প্রবেশ করে। গত ২২ মে থেকে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০০-তে। আর ২৭ মে’তে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে একদিনে চার থেকে সাড়ে চার হাজার। এয়ারলাইন্সগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ সময়ের এই কয়দিনে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে ইমিগ্রেশন বিভাগ বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানায় বিবৃতিতে। এসব কর্মীদের যাচাই-বাছাই এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাউন্টার বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য আরও ইমিগ্রেশন অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং এসব কর্মীদের জন্য খাবার ও পানির ব্যবস্থা করা হবে।

মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩১ মে’র পর অনুমোদিত কোটার আর কোনও কর্মী সেদেশে প্রবেশ করতে পারবে না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে এই সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ করা হলেও গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা মো. হাসিম জানিয়েছেন, এই সময় আর বাড়ানো হবে না। ৩১ মে’র মধ্যে কর্মীদের সেদেশে প্রবেশ করতে হবে এবং এই সিদ্ধান্ত অন্যান্য ১৪টি উৎস দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য।

২০০৮ সালে বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, আট বছর পর তা চালু হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর দুর্নীতির অভিযোগে ফের ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে সেই বাজার খুলতে সময় লেগেছিল তিন বছর। ২০২২ সালের আগস্টে দেশটিতে আবারও বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া শুরু হয়। মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ জুন থেকে বাংলাদেশসহ বিদেশি কর্মীদের দেশটিতে প্রবেশ বন্ধ থাকবে। নতুন নিয়মে কর্মী পাঠাতে হলে আবারও সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। দেশটি বর্তমানে থাইল্যান্ড,  কম্বোডিয়া, নেপাল, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রমিক নেয়।


👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

7 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

7 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

7 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

7 months ago