Categories: Bangladesh News

এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড: ৫ বছরেও শেষ হয়নি বিচার


রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ার। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কেড়ে নেয় ২৬টি প্রাণ। আহত হন ৭১ জন। সেই ঘটনায় মামলা হয়।

ঘটনার প্রায় তিন বছর ৯ মাস পর ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সমীর চন্দ্র সূত্রধর। তবে রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মামলাটির দিন ধার্য। ওই দিন চার্জশিটটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তবে আদালত চার্জশিটটি গ্রহণ না করে মামলাটি পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

ওই দিন আদালত আদেশে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন মানুষ মৃত্যুবরণসহ অসংখ্য মানুষ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারনামীয় গুরুত্বপূর্ণ আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন। মামলাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হওয়ায় পিবিআইয়ের একজন দক্ষ অফিসার দ্বারা মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

এরপর পিবিআই মামলার তদন্ত শুরু করে। গত ২২ জানুয়ারি মামলাটি তদন্ত করে আদালতে একই আসামিদের অভিযুক্ত করে ও লিয়াকত আলী খান মুকুলকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই এর ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রফিকুল ইসলাম।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত পিবিআই এর দেওয়া ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন-এফআর টাওয়ার ভবনের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে থাকা এস এম এইচ আই ফারুক, তাজভিরুল ইসলাম, সেলিম উল্লাহ, এ এ মনিরুজ্জামান, সৈয়দ আমিনুর রহমান, মিসেস ওয়ারদা ইকবাল, কাজী মাহমুদুল নবী ও রফিকুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে ফারুক জমির মূল মালিক। বিএনপি নেতা তাজভীরুল ইসলাম ভবন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। অন্য ৬ জন ভবন পরিচালনা কমিটির সদস্য। 

ওই সময় আসামিদের মধ্যে মনিরুজ্জামান, মাহমুদুল নবী, সেলিম উল্লাহ, রফিকুল ইসলাম ও ওয়ারদা ইকবাল পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আসামিরা বিভিন্ন সময় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। বর্তমানে সব আসামি জামিনে আছেন। সর্বশেষ গত ১২ মার্চ মামলার তারিখ ধার্য ছিলো। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত নথিটি সিএমএম বরাবর পাঠানোর আদেশ দেন। সিএমএম মামলাটি পরবর্তী বিচারের জন্য আদেশ দিবেন। এদিকে লিয়াকত আলী খান মুকুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

মামলা সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জানান, মামলাটির দুই দফা তদন্ত শেষে চার্জশিট আদালতে চলে এসেছে। মামলা বিচারের জন্যও প্রস্তুত হয়ে গেছে। চার্জগঠন করে বিচার শুরু হবে। এরপর সাক্ষী হাজির করে যতদ্রুত সম্ভব মামলার বিচারকাজ করবো।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবু সাঈদ বলেন, মামলার চার্জশিটে উল্লেখ আছে ১৫ তলা ভবনের রাজউক কর্তৃক যে অনুমোদন দেওয়া আছে তা সঠিক আছে। এটা পরিষ্কার উল্লেখ আছে। আর যে ব্যক্তি ল্যান্ডওনার তো ১৫ থেকে ১৮ তলা পর্যন্ত রূপায়ন গ্রুপকে করতে দিয়ে দেয়। রূপায়ন গ্রুপ রাজউক থেকে ১৮ তলা পর্যন্ত যে পারমিশন আনছে এটাও সঠিক আছে। সেটাও চার্জশিটে উল্লেখ আছে। এখানে যে ল্যান্ড অনার তার তো কোনো অপরাধ নাই। তিনি তো সঠিকভাবে স্যাংশন এনে বা পারমিশন এনে করেছে। পরবর্তীতে তিনতলা এক্সটেনশন করার জন্য রূপায়নকে দেওয়া হয়। এখানে জমির মালিকের দায় নাই। আর তিনি তো মারা গেছেন। আর রূপায়ন গ্রুপ তো সঠিকভাবে পারমিশন এনে করেছে। পরবর্তীতে তা হ্যান্ডওভার করেছে। হ্যান্ডওভারের পর তার তো আর কোনো দায় থাকে না। পরবর্তীতে কি করতে হবে এটা ডেভেলপারের আর থাকে না। এ কারণে মুকুল সাহেবকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে। আর বাকিদের মধ্যে ওয়ারদা নামে একজন মহিলা আছেন। কমিটির একজন সদস্য হিসেবে তার নাম আছে এটা তিনি জানেনও না। কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলো এমন কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পাইনি। আর ওয়ারদা দেশে থাকেন না।

তিনি বলেন, এই মামলা পুনরায় তদন্ত হওয়া উচিত। কেন? যদি এটাকে স্ট্যান্ড করতে হয় তাহলে রাউজকের লোককে মামলায় ইনভলপ করতে হবে। এটা হলো ফাইনাল কথা। রাজউকের অনেক লোক, উচ্চপদস্থ যারা অনুমোদন দিয়েছে তাদের কাউকে আসামি করা হয়নি। এটা সঠিকভাবে তদন্তই হয়নি। তদন্তে আগেও যা দিছে পরেও তাই দিছে। তেমন কোনো রদবদল হয়নি।

এই আইনজীবী বলেন, মুকুল সাহেব এখানে তার আর কোনো হেডঅ্যাক নাই। ফারুক সাহেব তো ল্যান্ড দিয়েই দিছেন। আর ওয়ারদা তো আসামিই হয় না। আশা করছি, আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন। হয়রানি থেকে মুক্ত হবেন।

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও হাসপাতালে একজন নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন ৭১ জন। ওই ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত ৩০ মার্চ বাদী হয়ে মামলা করেন।



Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago