Categories: Bangladesh News

উৎসব সবসময়ই সর্বজনীন হয়


রূপাই ও সাজু। পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ কাব্যোপন্যাসের দুটো চরিত্র। উপন্যাসটির ভাববর্ণনা বলছে, পাশাপাশি দুটো গ্রাম। তুমুল লড়াই তাতে। গ্রামের মাঝে বিল। বিলে জল। গৃহবধূ কলসিতে জল আনতে যায় ঘাটে। কলসের সেই স্পর্শ, ঢেউ হয়ে পৌঁছায় ওই গ্রামে। বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ পাড়ার পাখি ঘুরে বেড়ায় ওই পাড়ায়। সন্ধ্যা হলে ফিরে আসে নীড়ে। যুগ যুগ ধরে বাংলার মানুষ যেমন সম্প্রীতির সম্পর্ক লালন করছে, যেমন দ্বান্দ্বিক সম্পর্ককে লালন করছে, তেমনি ঢেউয়ে ঢেউয়ে মিশে থাকা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কগুলোও লালন করছে। অস্বীকার করতে পারছে না। করার সুযোগ নেই।

আমাদের গ্রামগুলো সুন্দর। সৌহার্দ্যের গন্ধ ছড়ায়। সেখানে হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বাস। লেনদেন, আত্মীয়তার, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি ওখানে যেন অবিচ্ছেদ্য আস্তানা গেঁড়েছে। আনন্দের কোনও নির্দিষ্ট রঙ নেই। থাকে না। আনন্দ বহুরঙা। আনন্দের কোনও ধর্ম নেই। দেখতে খানিকটা একই রকম। কাঁটাতারের বেড়ায় আনন্দকে আটকে রাখা যায় না! আনন্দ উন্মুক্ত।

শুভসম্পদ ভাগ করলে বাড়ে। আনন্দও ভাগ করলে বাড়ে। কমে না। আমাদের বৈশাখ মানে লাল-সাদা। আমাদের বসন্ত মানে বাসন্তি। আমাদের ঈদ আনন্দ। আমাদের ঈদ মানে টুপি, পাঞ্জাবি, পাজামা। আমাদের পুজো মানে শাখা-সিঁদুর। আমাদের পুজো মানে ঢোল ও বাদ্য-বাজনা। লালন মানে গেরুয়া বসন।

বাঙালি উৎসবপ্রেমী। বাঙালি উৎসবের জন্য উপলক্ষ তৈরি করে। সেই উৎসবে সম্পর্কগুলো বড় হয়, সুন্দর হয়, সমৃদ্ধ হয়। আমাদের সম্প্রীতির লৌকিক ও অলৌকিক উন্নয়ন ঘটে। এখন প্রশ্ন হলো, এসব উৎসব কি আমাদের একার? আমাদের নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়ের? নাকি সবার? বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত কথা, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ সত্যি কী ধর্ম যার যার, উৎসব সবার হয়? উৎসব কী সবার হওয়া সম্ভব?

মোটাদাগে আমাদের উৎসবগুলো হলো– ধর্মীয় উৎসব, দেশাত্মবোধক ও জাতীয় উৎসব, দেশীয় ঐতিহ্যগত উৎসব, জাতীয় লোকজ উৎসব ও স্থানীয় লোকজ উৎসব। ধর্মীয় উৎসবের দিকে একটু পরে আলোকপাত করা যেতে পারে। শুরুতে আমাদের অন্যান্য উৎসবের দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও জাতীয় ঐতিহাসিক দিবসসমূহ আমাদের দেশাত্মবোধক ও জাতীয় উৎসবের দিন। পহেলা বৈশাখ, বর্ষা উৎসব, নবান্ন উৎসব, পৌষমেলা, চৈত্রসংক্রান্তি, বসন্তবরণ, নৌকা বাইচ, বাউল উৎসব, জাতীয় পিঠা উৎসব, ঢাকা বইমেলা আমাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যগত উৎসব।

এছাড়াও আমাদের আছে ফোক সংগীত উৎসব, রবীন্দ্রজয়ন্তী, নজরুলজয়ন্তী। আমাদের আছে নানান স্থানীয় উৎসবও; যেমন: ঘুড়ি উৎসব, লালন উৎসব, মধুমেলা, জসীমমেলা, হাছন রাজা উৎসব, বাউল আব্দুল করিম লোকজ উৎসব, শাকরাইন, পিঠা উৎসব, জব্বারের বলীখেলা।

সন্দেহাতীতভাবে এসব প্রতিটি উৎসব আমাদের প্রাণের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এসব উৎসব আজ আমাদের সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না, একটি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য যতটা সমৃদ্ধ সে জাতি তত বেশি সমৃদ্ধ। তার সম্পর্ক, তার সম্প্রীতি তত বেশি সমৃদ্ধ। অতএব বলা যায়, যে যে ধর্মই পালন করুক না কেন, এসব উৎসব সবার। এগুলো আমাদের প্রাণের উৎসব। এগুলো আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ইতিহাস, আমাদের ঐতিহ্য। অতএব, ধর্ম যার যার হোক, এসব উৎসব নিশ্চিতভাবে সবার।

এবার আসা যাক আমাদের ধর্মীয় উৎসবের দিকে। শুরুতে একটু রক্ষণশীল প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। ধর্মীয় উৎসব তো কেবল নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের জন্য। সে উৎসব কীভাবে সবার হয়! ধর্ম যার উৎসব তো তারই। উৎসব কেন সবার হবে? আলোচনার শুরুতে এই বিতর্ক ওঠা স্বাভাবিক। ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে সম্মান দিয়ে প্রাথমিকভাবে আমরা সেই আলোচনায় ঢুকতে পারি। তবু যুক্তির প্রয়োজনে কিছু বিষয় নিশ্চিতভাবে উঠে আসবে। প্রশ্ন উঠবে, কেন আমরা ধর্মীয় উৎসবকেও সবার উৎসব বলছি? আমরা কেন বলছি– ধর্ম যার যার উৎসব সবার?

আমাদের দেশে ইসলাম ধর্মের মানুষের জন্য প্রধানতম ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, আশুরা, ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর, শবে বরাত, জুমাতুল বিদা ও আখেরি চাহার শোম্বা ইত্যাদি। হিন্দু ধর্মের মানুষের প্রধানতম ধর্মীয় উৎসব হলো দুর্গাপূজা, কালীপূজা, সরস্বতী পূজা, রথযাত্রা, দোলযাত্রা, জন্মাষ্টমী, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা প্রভৃতি। বৌদ্ধধর্মের মানুষের উৎসব হলো বুদ্ধ পূর্ণিমা, মধু পূর্ণিমা, কঠিন চীবর দান, মাঘী পূর্ণিমা।খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষের উৎসবসমূহ হলো বড়দিন, ইস্টার সানডে। এখন প্রশ্ন হলো, এসব উৎসব কীভাবে সর্বজনীন হয়ে উঠতে পারে? কীভাবে সবার উৎসবে পরিণত হতে পারে? এগুলো তো নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের উৎসব!

ধর্মীয় উৎসবের মূলত দুটো অংশ। প্রথম অংশে ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ব্যক্তি, দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য সমৃদ্ধি কামনা করেন। ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ধর্মীয় উৎসবের এই প্রথমাংশটি সম্পূর্ণরূপে কেবল ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য। অন্য কারও জন্য হওয়ার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় অংশটি হলো, সর্বজনীন উৎসব অংশ, যা সবাই উপভোগ করতে পারে। কালের পরিক্রমায় প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে কিছু সর্বজনীন উৎসব সংশ্লিষ্ট হয়ে উঠেছে, অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। নানান কারণে আমরা আজ বলছি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। যেমন:

এক. কিছু ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। একজন মুসলিমও দুর্গাপূজায় ছুটি ভোগ করেন। ফলে এই ছুটি তিনি পরিবারের সঙ্গে, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন। বেড়াতে যেতে পারেন। ফলে একটি ধর্মীয় ছুটিও তার জন্য উৎসবের আনন্দ জোগাতে পারে। যার যার নিজের মতো করে উদযাপন করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। ফলে সেই উৎসব হয়ে উঠতে পারে সবার।

দুই. প্রায় প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে সাজে আমাদের চারপাশ। আয়োজিত হয় মেলা। সেসব মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। কেবল একটি নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের জন্য নয়। যেমন: আমাদের গ্রামে ঈদগাহ মাঠের পাশে খাবারের দোকান বসে। সেসব দোকান থেকে যে কেউ খাবার কিনতে পারে। যিনি মুসলমান ধর্মের নন, তারাও সেসব দোকান থেকে খাবার কিনতে পারে। ফলে এটা তার জন্যও উৎসব বৈকি! দুর্গাপূজা উপলক্ষে শহরে-গ্রামে অনেক বড় বড় মেলা বসে। একজন মুসলিম চাইলে সেই মেলা থেকে তার শিশুর জন্য মাটির হাঁড়ি-পাতিল কিনতে পারে। সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস কিনতে পারে। ফলে সেই উৎসব শুধু হিন্দুদের জন্য নয়, সব ধর্মের মানুষের জন্য হয়ে উঠতে পারে আনন্দের।

তিন. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদে প্রচুর নতুন কাপড়, প্রসাধনী ও অন্যান্য জিনিসপত্র আমদানি হয়। উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমি অন্য ধর্মে বিশ্বাসী অনেককেই চিনি, যারা এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করেন। অপেক্ষা করেন ভালো মানের কাপড় কেনার জন্য। ফলে ঈদ ভ্ন্নি ধর্মাবলম্বী পরিবারের জন্যও হয়ে ওঠে আনন্দের, উৎসবের।

চার. আমাদের গ্রাম্য অনেক পরিবার অন্যান্য ধর্মাবলম্বী দ্বারা পরিবেষ্টিত। ঈদে আমাদের বাড়িতে পায়েস রান্না হয়। নানান রকম খাবার তৈরি হয়। অনেক ভিন্নধর্মের মানুষকে আমরা সেই পায়েস খাওয়ার দাওয়াত দেই। হিন্দুরা পূজায় নাড়ু বানায়। লুচি বানায়। আমাদেরও দাওয়াত দেয়। ফলে আমাদের ধর্মীয় উৎসব হয়ে ওঠে ভিন্ন ধর্মের প্রতিবেশীদের জন্যও অত্যন্ত আনন্দের।

পাঁচ. আমাদের ঘরে যখন উৎসবের আলো জ্বলে তখন সে আলোয় আলোকিত হয় আমাদের প্রতিবেশীর ঘরও। আলো বন্ধ করে রাখার কোনও উপায় নেই। উৎসবের ব্যঞ্জনা গৃহবন্দি করে রাখার সুযোগ নেই। ফলে উৎসবের আলো, উৎসবের ব্যঞ্জনা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। আর সেই আলো ছড়িয়ে পড়ার সময় ধর্ম দেখে না। বর্ণ দেখে না। উৎসবের আলোয় আলোকিত হয় আমাদের চারপাশ। উৎসব হয়ে ওঠে সবার। গৃহে গৃহে প্রকম্পিত হয় একটি ধ্বনি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।

কেবল উপর্যুক্ত পাঁচটি কারণ নয়, আরও অসংখ্য কারণ ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ কথাটা আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত। যারা এই কথাকে ভুল ব্যাখ্যা করতে চান, ভুলভাবে উপস্থাপন করতে চান, তারা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি চান না। 

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসা যাক। পহেলা বৈশাখ কি আমাদের উৎসব? নাকি ভিনদেশের? কবে থেকে এই উৎসব আমাদের? কোথা থেকে এলো? বাঙালি একটি সমৃদ্ধ জাতি। তার সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। কৃষিপরিবার, কামার-কুমার-জেলেপরিবার বাংলার সংস্কৃতির আঁতুড়ঘর। শত-সহস্র বছর যাবৎ বাংলার ঘরে ঘরে নববর্ষের সংস্কৃতি পালিত হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে হালখাতা হচ্ছে। মেলা হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ তো সেই সংস্কৃতির বর্তমান রূপ। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, আজকের মঙ্গল শোভাযাত্রা কোথা থেকে এলো? এ তো আমাদের সংস্কৃতি নয়! মনে রাখা দরকার, সংস্কৃতির প্রতিনিয়ত বিকাশ ঘটে। পরিবর্তন ঘটে। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতির রূপ বদলায়। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, সেকালের সেই যাত্রাপালা আজও আছে, তবে নতুন ঢংয়ে মঞ্চস্থ হচ্ছে। যাত্রাপালার এই বিকাশ স্বাভাবিক। একটি বিন্দুতে স্থিরতা অস্বাভাবিক। একটু খেয়াল করলে দেখবো, আমার বই পড়তাম, এখনও পড়ি। এখন কেউ কেউ পিডিএফ বই পড়ি। বই পড়ার এই সংস্কৃতির বিকাশ, পরিবর্তনও স্বাভাবিক। ধর্মীয় ক্ষেত্রেও এসব পরিবর্তন লক্ষণীয়। ধর্মের ক্ষেত্রে সেসব পরিবর্তন ও আধুনিকতা লক্ষ করা যায়। ধর্ম সেসব পরিবর্তন গ্রহণ করবে কিনা সেটি ধর্মীয় বিতর্ক। সেই বিতর্ক এখানে এগিয়ে নেওয়া অপ্রয়োজনীয়।

খুব করে জানতে ইচ্ছে করে, আমরা আজকের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ধারা নিয়ে বিতর্ক তুলছি কিন্তু কেউ পহেলা বৈশাখের ভাতা গ্রহণ করতে আপত্তি তুলছি না কেন? ‘উৎসব সবার’ এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক তুলছি কিন্তু একজন মুসলিম দুর্গাপূজায় সাধারণ ছুটি ভোগ করতে, কিংবা ভিন্নধর্ম বিশ্বাসী কেউ ঈদে সাধারণ ছুটি ভোগ করতে আপত্তি তুলছে না কেন?

বিশ্বের অনেক দেশে উৎসব বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সাহায্য করে। দেশি, বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। আমাদের প্রতিবেশী দেশও করে। আমাদেরও সেই সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে আমাদের বৈসাবি উৎসবের কথা বলা যেতে পারে। বৈসাবি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান ৩টি আদিবাসী সমাজের বর্ষবরণ উৎসব। এই উৎসব অনেক সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলের আরও একটি বড় উৎসব হলো জলকেলি। আমরা চাইলে এসব উৎসবে বিদেশিদের আকৃষ্ট করে বৈদেশিক মুদ্রাভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে পারি। অথচ আমরা কেবল বিতর্ককেই সমৃদ্ধ করছি।

ধর্ম মানুষকে একা করে না, গোষ্ঠীবদ্ধ করে না, বরং সমাজবদ্ধ করে, সামাজিক সম্পর্কগুলো মজবুত করে। ধর্ম সংঘর্ষ ছড়ায় না, সম্প্রীতি ছড়ায়। উৎসব, উৎসবের আলো মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা যায় না, রাখতে নেই। উৎসব ছড়িয়ে দিতে হয়। উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে হয়। তাহলেই সমৃদ্ধি আসে জীবনে। উৎসব কোনও ব্যক্তির একার নয়, কোনও গোষ্ঠীর একার নয়। উৎসব সবার।

 

লেখক: শিক্ষক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

[email protected]

 


👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago