দেশে চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তা হলো এই নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না যার অর্থ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীক ব্যবহার হচ্ছে না। যদিও গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল যে বিরোধী দল– বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচনে অংশ নেবে, সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠছে তা হলো বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাদের প্রার্থীদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
তবে দলের নেতৃত্বের পক্ষে তাদের সকল স্থানীয় প্রার্থীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা কঠিন হবে কারণ গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে অনেক বিএনপি নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রথম ধাপের নির্বাচন প্রক্রিয়া যখন শুরু হয়েছে ঠিক সেই সময় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদেরও প্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় কোন্দল নিরসন এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের সাংগঠনিক প্রেক্ষাপটে, এটি একটি অত্যন্ত শক্তিশালী উদ্যোগ। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে যে এই নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতির অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় যে, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, সাংসদ এবং মন্ত্রীদের মধ্যে বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নিজেদের আত্মীয়দের পুনর্বাসনের প্রবণতা রয়েছে। এমনকি দলের পোর্টফোলিওগুলোতে নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের বঞ্চিত করা হয়। ফলে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, সাংসদ এবং মন্ত্রীরা নির্বাচনের সময় সরাসরি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিতে না পারলেও তাদের পক্ষের নেতারা নির্বাচনের সময় ভোটারদের প্রভাবিত করে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতারা নির্বাচনে তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণের একটা সুযোগ পাবে, যেমনটা আমরা বিগত সংসদ নির্বাচনে দেখেছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে ৫৫ জন একাদশ জাতীয় সংসদের সাংসদ ও মন্ত্রী নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সুতরাং স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করার জন্য ক্ষমতাসীন দলের জন্য একটি সতর্ক বার্তা ছিল গত সংসদ নির্বাচন। দেশের প্রায় সকল স্থানে স্থানীয় সাংসদরা তাদের অনুসারী ও সমর্থকদের নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একটি সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে চলেছেন। ফলে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান থাকলেও দলের সাংগঠনিক শক্তিকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিজেদের অনুসারীদের ক্ষমতায় বসানোর প্রবণতা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে, এই ধরনের রাজনীতি দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা ও সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষের অনুভূতি তৈরি করে। তাছাড়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা নব্য আওয়ামী নেতা ও অনুগামীদের একটি দল গড়ে উঠেছে দেশের প্রায় প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায়। স্থানীয় সাংসদ এবং পোর্টফোলিওধারীদের সহায়তায়, অনুপ্রবেশকারীদের এই গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের আখেরই গুছাচ্ছে না, নিবেদিতপ্রাণ নেতা ও কর্মীদের ওপর আধিপত্যও প্রতিষ্ঠা করে চলেছে।
তাই মনে হচ্ছে সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্ষমতাসীন সাংসদ ও মন্ত্রীদের আত্মীয়স্বজনদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
এখন একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হলো বিএনপি নেতৃত্ব এখনও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন বর্জন করতে চাইছে কেন এবং নির্বাচন বয়কটের আগের সিদ্ধান্ত থেকে তারা শিক্ষা নিচ্ছে না কেন? তাদের এই সত্যটি বুঝতে হবে যে, একটি রাজনৈতিক দল দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতা থেকে দূরে থাকলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হয় না। ক্ষমতায় দীর্ঘ অনুপস্থিতি বিএনপির সকল স্তরের দলীয় সংগঠনগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। সুতরাং, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় পর্যায়ের দলীয় নেতাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ করে দিয়ে সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ ছিল। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সব সময় দলীয় শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। বরং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের সময় প্রার্থীর জনপ্রিয়তা এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপটও নির্বাচনি রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে।
সুতরাং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উচিত স্থানীয় নেতাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া। দলীয় নেতৃত্ব যদি তাদের প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে না পারে, তাহলে দলের সংগঠনের ওপর দলীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়ে যাবে। আমরা ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমের খবরে দেখেছি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সারা দেশে বিএনপির অনেক প্রার্থী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাই নির্বাচন বর্জন করার পরিবর্তে তাদের উচিত ছিল স্থানীয় নেতাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে উৎসাহিত করা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যদি বিএনপির বেশ কিছু নেতা জয়ী হতেন, তা হলে তারা নিজেদের এলাকার বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারতেন। দুর্ভাগ্যবশত, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পূর্বের মতো এখনও পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
নির্বাচনে পূর্ণ শক্তির বিএনপির অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা উপজেলা পর্যায়ে তাদের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকে আরও শক্তিশালী করবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি সাংসদ ও মন্ত্রীদের আত্মীয়দের নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে, তাহলে স্থানীয় ভাবে জনপ্রিয় নেতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্বাচনে বিজয়ী হবে।
শাসক দলের স্থানীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত হবে। এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব দলকে কেবল স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তি সুসংহত করতেই সহায়তা করবে না, বরং দেশে একটি দায়িত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেও সহায়তা করবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা দেখার জন্য আমাদের চার স্তরের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
লেখক: অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…