Categories: Bangladesh News

উচ্চদরের ছাগল ও পাঠা আছে যে দেশে!


‘সুরঞ্জনা তোমার হৃদয় আজিকে ঘাস’!

আমরা সুরঞ্জনাদের নিয়ে একটু পরে বলাবলি করবো কিন্তু এই মুহূর্তে জীবনানন্দের ওই ঘাসের কথা বলছি না। বলছি ছাগল যে ঘাস খেতে ভালোবাসে সেই ঘাসের গল্প। পাহাড়ের চূড়ায় ঘাসের আবাদ নাকি ভালো হয় আর ছাগলরা পাহাড় বেয়ে চূড়ায় ওঠে সেই ঘাস খাওয়ার জন্য। তো এক মা ছাগল তাড়া দিচ্ছে বাচ্চা ছাগলকে তাড়াতাড়ি চূড়ায় উঠতে। বাচ্চা ছাগল মা ছাগলের সাথে পেরে না উঠে বললো– মা ওই দেখো আকাশ পথে রকেট যাচ্ছে। রকেট এত তাড়াতাড়ি উপরে ওঠে কেমনে?

মা ছাগলের উত্তর– তোর পশ্চাৎদেশে আগুন ধরিয়ে দিলে তুইও তাড়াতাড়ি উপরে উঠতে শিখবি!

ক্ষমতার আগুন অন্যরকম। পেছনে লাগাতে জানলে খুব তাড়াতাড়ি উপরে ওঠা যায়। এ পর্যন্ত অনেকেই উঠেছেন। তবে কথায় আছে রকেট যে গতিতে ওপরে ওঠে তার পতনও হয় সেই একই গতিতে। তাই আসুন আগে রকেট গতিতে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর পড়ে নেই।

এক.
প্রশ্ন– ধরুন, এরশাদের আমল থেকে হয়তো আপনি প্রেমখেলাপির মতো ঋণখেলাপি হয়ে আছেন। আপনার কিছু হচ্ছে না কেন?

উত্তর– ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ গড়ার দীর্ঘস্থায়ী উপায় তার মতো আর কেউ জানে না!
 

দুই.
প্রশ্ন– মমতাজ বা সুরঞ্জনাদের নিয়েও তো কথা বলার কথা তাই না?

উত্তর– হুম। সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর কিংবা রাজস্ব কর্মকর্তা ‘ছাগল মতিউরের’ স্ত্রীরাই মমতাজ বা সুরঞ্জনা। বেনজীর বা মতিউররা তাদের স্ত্রীদের নামে জমি, রিসোর্ট, টাকা, ফ্ল্যাট কত কিছু যে লিখে দেন। তাজমহল খ্যাত শাহজাহানও তার স্ত্রীকে এত ভালোবাসতেন না যতটা বাসেন একালের বেনজীর বা মতিউর!

তবে মমতাজ, সুরঞ্জনার মতো তাদের বনলতা সেনও বলা যেতে পারে। তারা দু-দণ্ড শাস্তি দিতে পারেন। মতিউর সাহেব এদিক থেকে এগিয়ে আছেন। তার স্ত্রী দুইজন বিধায় শান্তিও দ্বিগুণ। স্ত্রী যত বেশি শ্বশুর-শাশুড়ি, শালা-শালিও তত বেশি। এমন বেশি-বেশি আত্মীয় দরকার তাদের নামে সম্পদ কেনার জন্য।

তিন.
প্রশ্ন– বেনজীর বা মতিউরদের রিসোর্ট এত পছন্দ কেন?

উত্তর– শরীর ঝিমঝিম বা ম্যাজ-ম্যাজ করলে যখন তখন নীরবে ও গোপনে রিসোর্টে আরামপ্রদ ‘ম্যাসাজ’ নেওয়া যায়। পাপিয়া নামের একজন দেখিয়ে গেছেন গান বাজনার সাথে সাথে সুইমিংপুলের নীল জলে কতটা আনন্দে অবগাহন করা যায়। কেউ ছাগল কিনতে গিয়ে ধরা খায় আর কেউ কেউ রিসোর্ট বানিয়ে সেখানে মাছ, গরু বা ছাগলের চাষ করে।

চার.
প্রশ্ন– সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের কি পতন হয়েছে?

উত্তর- না! কারণ উনি বিতর্কিত হলেও একদা ক্ষমতার ‘চাঁদ’ ছিলেন। চাঁদের পতন তারাদের মাঝে আকাশে, মাটিতে না! সে কারণে উনি আকাশ পথে বিদেশে যেতে পারেন, ইচ্ছে হলে ফিরবেন কিংবা থেকে যাবেন। সব সেই চাঁদের ইচ্ছা।

পাঁচ.
প্রশ্ন– ‘দুর্নীতি দমন কমিশন’ বা  দুদকের আরেকটি পূর্ণরূপ কী?

উত্তর– দুধ-দই-কলা! এরা ক্ষমতা বা বড় চাকরিতে কেউ থাকলে অবৈধ টাকায় দুধ দই কলা খাচ্ছে কিনা সেটা দেখে না, ক্ষমতা বা চাকরি হারানোর পর জানতে চায়- দুধ-দই-কলা কোথায়?

ছয়.
প্রশ্ন- এদেশে গাধা বেশি নাকি ছাগল?

উত্তর– গাধা বরাবরই কম। এরশাদ আমলে বলা হতো ‘চিড়িয়াখানায় গাধা নেই/এরশাদ আছে চিন্তা নাই’! এরপর মনে করিয়ে দেওয়া যায় নজরুলের কবিতা– ‘বাহিরের দিকে বাড়িয়াছি যত/ভিতরের দিকে তত/গুনতিতে মোরা বাড়িয়া চলেছি গরু ছাগলের মতো!’

ছাগলদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ছেলের ‘লাখ টাকার কুরবানির ছাগল কাণ্ডে’ রাজস্ব কর্মকর্তা বাপের কোটি কোটি টাকার বাগান নিয়ে টানাটানি পড়েছে! কেউ কেউ বলছেন অবৈধভাবে শত কোটি টাকা কামিয়ে নেওয়া সেই রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর নাকি আমাদের আবারও ছাগল বা পাঠা বানিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।

যাইহোক আমরা আবারও ছাগলে ফিরে যাই। যতই বলুন পাগলে কিনা বলে ছাগলে কী না খায়– আপনি ততই অবাক হবেন জেনে যে ছাগল খাবার দাবারের ব্যাপারে বেশ নাকউঁচু। এরা সামনে পেলে চিবোতে থাকে অনেক কিছু কিন্তু খায় বা পেটের ভেতরে নেয় বেছে বেছে। কারণ চার প্রকোষ্ঠে বিভক্ত এদের পরিপাকতন্ত্র বেশ জটিল। অনেকেই জেনে অবাক হবেন যে দশ হাজার বছর আগে থেকেই ছাগল গৃহপালিত পশু হিসেবে মানুষের কাছাকাছি আছে। হাজার বছর ধরে ছাগলের চামড়া মদ ও পানি বহন করার পাত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ছাগলের দুধ আহরণ আর মাংসের কারবারিতে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের নাম আছে। বাংলাদেশ বহু আগে থেকেই উঁচু দরের ছাগল সম্পন্ন দেশ।

তবে বাংলাদেশে চুরির তালিকাতেও ছাগলের নাম শীর্ষে থাকে। ছাগল চুরির ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা করম চাঁদ গান্ধী দুটি ছাগল পালতেন। ছাগলের দুধ পান করতেন। ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের আগে বা পরে উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে এর প্রতিরোধে তিনি একবার বাংলাদেশের নোয়াখালিতে এসেছিলেন। গান্ধীজীর ছাগল দুটি সে সময়ে চুরি হয়ে যায়!

ছাগলের দুধ ও মাংসের পুষ্টিগুন ভালো। ভালো লাগে শিং ওয়ালা ছাগলের লড়াইয়ের দৃশ্য। সবচেয়ে ভালো লাগে ছাগলের তৃতীয় বাচ্চাকে। দুই বাচ্চা যখন মা ছাগলের দুধ খায় তৃতীয় বাচ্চা তখন তিড়িং বিড়িং করে লাফায়। এই লাফালাফির দৃশ্য শৈল্পিক!

ছাগল নিয়ে অসংখ্য কৌতুক আছে। দু-তিনটা বলে বিদায় নেই।

এক.

এক লোক সারা পশুর হাট মাথায় তুললো। তার এমন একটা ছাগল চাই যে কিনা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে। সারা হাট খুঁজে যখন ফিরে যাচ্ছে তখর এক ধুরন্ধর কিসিমের বিক্রেতা বললো শুধু আমার ছাগলটা ইংরেজিতে কথা কয়। লোকটা অবাক হয়ে বললো – কই দেখিতো। ধুরন্দর বিক্রেতা ছাগলের গায়ে খানিক আঘাত দিয়ে জানতে চাইলো- বলতো এখন কী মাস? ছাগল কুকিয়ে ডেকে উঠলো– মেএএমেএএ।

বিক্রেতা আবারও ছাগলকে মেরে প্রশ্ন করলো বল- জুন মাসের আগের মাসটা কী? ছাগলের সেই একই উত্তর- মেএএমেএএ…

দুই.

বল্টু টেলিফোন করলো জিনিয়াকে। ধরলো জিনিয়ার মহা-ফাজিল ভাগ্নে পল্টু। বল্টু জানতে চাইলো জিনিয়া কই?

পল্টু বললো জিনিয়া খালা মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। আপনি খালাকে কীভাবে চেনেন? বল্টু বললো এটা তোমার খালার কাছ থেকে শুনে নিও। এখন তোমার খালাকে ফোনটা দিয়ে বলো যে তার জান টেলিফোন করেছে। পল্টু বললো– খালার  মোবাইলে আপনার নম্বর সেভ করা ‘ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা’ হিসেবে! বল্টু মনের দুঃখে মোবাইল ছুঁড়ে মারলো!

তিন.

ছাগলের আরেক প্রজাতি পাঠা। পাঠার গায়ের গন্ধ সহ্য করা সম্ভব না। তো এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলো। কে বেশি পাঠার গন্ধ শুকে টিকে থাকতে পারে। প্রথমে গেলো এক আমেরিকান। সে পাঁচ মিনিটে মাথায় অজ্ঞান হয়ে গেলো। এবার গেলো এক রাশিয়ান। সে পনের মিনিট পরে ফিরে এলো বমি করতে করতে। শেষে গেলো এক পাকিস্তানি পাঠান। পাঁচ মিনিট পর এবার পাঠা নিজে তার দড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে এলো।

ব্যঙ্গ করার জন্য মানুষকে ছাগল, রামছাগল  কিংবা পাঠা যে নামেই ডাকুন মানুষ আসলে প্রশংসা করে সিংহের; যে সিংহ মানুষকেই খেয়ে ফেলতে পারে। মানুষ সিংহের প্রশংসা করে ভালোবাসে গাধাকে। কারণ গাধার আনুগত্য তার ভালো লাগে। আর মানুষ পালন করে ছাগলকে কারণ পালনকর্তার ইশারায় ছাগল লাফাতে পারে।

তবে মানুষ সহসা ধারণা করতে পারে না যে ক্ষমতার বাগান খেয়ে যে ছাগল বেড়ে ওঠে সে একদিন দুর্গন্ধ ছড়ানো পাঠায় পরিণত হয়। মানুষরূপী পাঠারা পালাতে পারে নিঃশব্দে। হোক তার নাম বেনজীর কিংবা মতিউর!

লেখক: রম্যলেখক

 


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago