আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মতাদর্শ নিয়ে রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তবর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত ‘দ্য হিরোস অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহত শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত গৌরবের যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ গৌরবের সাক্ষী হতে পেরেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, ঢাবি সবসময় পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেয়। এজন্য ফ্যাসিস্ট সরকার চেষ্টা করে, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দমিয়ে রাখতে। স্বৈরাচার জানে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে গেলে এ জাতি দাঁড়িয়ে যাবে। ঢাবির শিক্ষার্থীরা আত্মমর্যাদা নিয়ে থাকতে পারলে এ জাতির পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগবে না।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই আন্দোলনে শুধু ঢাবি নয়, মাদ্রাসা ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে লড়াই করেছেন। ১৭ জুলাই যখন ভেবেছি আমরা হেরে গেছি, তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে এসে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। যারা এ লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের আমরা বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”
নাহিদ বলেন, “১৫ জুলাই আমরা দেখেছি কিভাবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ভাই-বোনদের উপর আক্রমণ করেছে। সেদিন আমরা ঢাকা মেডিকলে আহত শিক্ষার্থীদের আর্তনাদ দেখেছি। আমরা সেদিন সারাদেশের মানুষের কাছে আহ্বান করেছি, আপনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। আমাদের আহ্বান সাঁড়া দিয়ে সারা দেশের মানুষ এগিয়ে এসেছিলেন। এটা আমরা আজীবন স্মরণ করব।”
নাহিদ আরো বলেন, “আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব ঠিকই, কিন্তু আমাদের পিছনের ইতিহাস ভুলে যাব না। আমরা যখন প্রথম বর্ষে এসেছি, তখন শিক্ষার্থীদের ওপর করা নির্যাতনের কোন বিচার করা হয়নি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মাসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমার ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। তখন আমরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা না করে ছাত্রলীগ দিয়ে আমাদের মারধর করেন। অথচ এই উপাচার্য ও প্রক্টরের এখনো কোন বিচার হয়নি। আমি প্রশাসনকে বলবো, আপনারা এদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, যাতে আর কেউ এ রকম করার সাহস না পায়।”
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এ উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফ্যাসিবাদের দোসররা আস্ফালনের চেষ্টা করছে। আমরা বলে দিতে চাই, জুলাই-আগস্ট ভুলে যাবেন না। জুলাইয়ের চেতনা শেষ হয়নি। যদি বিন্দু পরিমাণ আস্ফালনের চেষ্টা করেন, তাহলে আমরা দ্বিগুণ শক্তিতে প্রতিহত করব। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ- এই মতাদর্শ বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। আমরা আমাদের এই কমিটমেন্ট রক্ষা করব।”
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলের নারী শিক্ষার্থীরা যখন জেগে উঠেছিল, তখন খুনি হাসিনার ভীত নেড়ে উঠেছিল। আমাদের হল ছাড়া করার পর আমাদের আশা প্রায় ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোন যখন রাস্তায় নেমেছিল, তখন এ আন্দোলন জ্বলে উঠেছিল। এরপর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, সাধারণ ছাত্র জনতার বিপুল অংশগ্রহণে আমরা আজকের এ দেশ পেয়েছি।”
তিনি বলেন, “ডেভিল কার্যক্রমে যদি বর্তমানের কোন রাজনৈতিক দলের কেউ জড়িত থাকেন, তাহলে তাকেও ডেভিল হান্টের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন যে সিট সমস্যার কথা বলা হয়েছিল, এটা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে জিইয়ে রাখা একটি সমস্যা। যখনই হলগুলো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে এলো, তখনই এ সিটের সমস্যা কেটে গেল। ফ্যাসিজমের ছোট একটি ভার্সন হচ্ছে, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি আমরা স্টেট কল্পনা করি, তাহলে এখানে প্রত্যেকটা মানুষ ব্যক্তি হিসেবে ফ্যাসিস্ট, প্রশাসনিকভাবে ফ্যাসিস্ট, শিক্ষকরা ফ্যাসিস্ট; সেখানে হলের মধ্যে ফ্যাসিজমের চর্চা হয়। আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে ফ্যাসিজমের উর্ধ্বে যেতে হবে।”
তিনি বলেন, “বর্তমান যে প্রশাসনিক কাঠামো, আমাদের দেশের নেতার ছেলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিদেশে পড়ে। নেতার ছেলেরা বিদেশে পড়ে দেশে এসে নেতা হয়। আর আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা ওই নেতার পিছনে ঘুরে পাছার ছাল তুলে ফেলে। এখানে প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী কোন দলের না হয়েও নেতা হয়ে উঠুক। ফ্যাসিজমকে আমরা লাল কার্ড দেখিয়ে যাচ্ছি।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “তোমরাই বাংলাদেশ। মানুষকে সম্মান করতে পারার মধ্যে নিজেকে সম্মান করার সুযোগ আসে। তোমাদের কারণে আমরা একটি বিপুল সম্ভাবনার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। তোমাদের প্রতি এই বিশ্ববিদ্যালয়, জাতি প্রকৃতপক্ষে ঋণী।
তিনি বলেন, “ডাকসুর জন্য আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। জুলাই স্মৃতিকে ধারণ করাটা একটা সম্মানের বিষয়। জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালার বেশ অগ্রগতি হয়েছে। অবকাঠামোগত কাজ শেষের দিকে। চারুকলার মাধ্যমে কাজ গুছিয়ে রাখা হয়েছে। বেশকিছু গবেষণার কাজ চলছে। গণঅভ্যুত্থানের ওপর এ গবেষণা করা হবে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন অধ্যাপক এপ্রিল মাসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মামলা মোকাদ্দমায় হেরে যাই। এক্ষেত্রে আমরা একটি বডি করেছি, তারা সবকিছু ঠিক করে রিপোর্ট প্রদান করবে। আবু বকর হত্যাকাণ্ড আমরা আবার দেখার উদ্যোগ নিয়েছি। একটা দুইটা কাজে যদি উদাহরণ তৈরি করতে পারি, তাহলে বাকিগুলো অনেকটা হয়ে যাবে।”
অধ্যাপক নিয়াজ বলেন, “আমরা গত ডাকসু নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছি। এছাড়া যত রকমের বৈষম্য হয়েছে, তা নিয়ে ফাইল করেছি। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণে তিনটি বডি করা হয়েছে। তারা এগুলো সংগ্রহ করছেন।”
উপাচার্য বলেন, “আমরা সাতটা হল করার উদ্যোগ নিয়েছি। মেয়েদের জন্য চাইনিজ হলসহ ছেলেদের চার পাঁচটা যা লাগে করা হবে। তোমাদের চাওয়ার মধ্য থেকে আমি চেষ্টা করছি দুই একটা কাজ যত তাড়াতাড়ি করা যায়। আমাদের অনেক অ্যালামনাই রয়েছে, তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। আল্লাহ তোমাদের প্রতি রহম করবেন।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, ঢাবি শাখা শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ, সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, তরিকুল ইসলাম, মাহিন সরকার, আবু বাকের মজুমদার, ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তন্বী, সুলতানা, আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৩ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা স্মারক ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultractivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 bdphoneonline.com
👉 dailyadvice.us
Introduction: The Paradigm Shift in Versatile Electronics The emergence of versatile electronics is revolutionizing conventional…
ATMXT3072M1 and ATMXT2496M1 single-chip touchscreen controllers carry dependable and safe contact detection to automotive shows…
Within the evolving 5G panorama, channel-state data (CSI) is crucial for optimizing community efficiency and…
Starting from 22V to 200V and supporting completely different radiation ranges, TI’s new household of…
As Germans put together to vote on Sunday, their nation’s sluggish financial development will likely…
In at this time’s quickly evolving healthcare panorama, digital transformation is not a luxurious however…