ভোর হয়ত আযানের খানিকটা পরেই হবে আচমকা ঘুম ভেঙে গেল। একটা দম আটকানো অনুভূতি নিয়ে ঘুমটা ভাঙলো। বুঝতে পারছিলাম বুকের ভেতর একটা গভীর ব্যথা হচ্ছে। পরক্ষণেই একটা আবছায়া মুখ চোখের মধ্যে ভেসে উঠলো। সে কী মায়ের মুখ! মায়ের মুখটা মনে করতে পারছি না যেন। সত্যিই কি জেগে উঠেছি না এখন ঘুমিয়ে আছি বুঝতে পারছি না। লোকজনের ভিড়। এক কোণায় বাবা চুপচাপ বসে আছেন। ছোট ফুফু এগিয়ে এসে বাবার কানে কানে কী যেন বলছেন। বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমের দিকে এগোলাম। চোখ মুখে পানির ছিটে দিয়ে বেরিয়ে আসতেই ছোট ফুফু এসে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে মায়ের বিছানার পাশে বসালেন। মা চোখ বন্ধ করে আছেন। দেখে মনে হচ্ছে মা খুব শান্তিতে দু-চোখ এক করে আছেন। তবে কি মা মারা গেছেন! মা মারা গেছেন! মায়ের মুখটা এবার যেন স্পষ্ট হলো। স্বপ্নে দেখলাম মা মারা গেছেন। অথচ ঘুম ভাঙার পরেও অনুভূতিটা একই রইলো। একবার ভাবলাম একটা ফোন করি মাকে। ঘড়িতে সময় দেখে ফোনটা রেখে দিলাম। খচখচে ভাবটা নিয়েই আবার শুয়ে পড়লাম। মা বাইরের রান্না ঘরে বসে পিঠা বানানোর আয়োজন করছেন। টেকেরহাট সরকারি কোয়াটারে আমাদের ভাড়া দোতলা বাড়িটার বাইরে মা একটা মাটির চুলার রান্নাঘর বানিয়েছিলেন। সেখানেই মায়ের পিঠার আয়োজন। পাটিসাপটা আর তেলেভাজা হবে। আমার পছন্দের পিঠা। মা তার লম্বা চুলোগুলো পিঠের উপর এলিয়ে শিলনোড়া দিয়ে চাল পিষছেন। মাকে কী সুন্দর দেখাচ্ছে। পাশেই বসে আছেন একতলার কাকি। কাকি কেমন বুড়িয়ে গেছেন অথচ তিনি মায়ের থেকেও বয়সে অনেক ছোট ছিলেন। তার তিন মেয়ে। পরপর তিনটি মেয়ে হওয়ার অপরাধে কাকা আরেকটা বিয়ে করেছেন। সে ঘরে তার এক ছেলে। ছোট বউয়ের ছেলেকেই কোলে করে কাকি বসে আছেন। আমাকে দেখে একটু হাসলেন। আমি আমার প্রিয় হালকা রঙের গোলাপি হাফ প্যান্টটা পরে বাসার সামনে লাফালাফি করছি। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। মা ডাকছেন উঠে আয়, ঠান্ডা লেগে যাবে। তেলে ভাজা পিঠার সুবাসে বৃষ্টির বাতাস ম ম করছে। মা ডেকেই যাচ্ছেন, উঠে আয় ঠান্ডা লেগে যাবে। আমি দূরে ছুট দিলাম। মায়ের কণ্ঠ বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে, মা বাতাসে মিশে যাচ্ছেন।
আমাদের দোতলার ভাড়া বাড়িটা মিলিয়ে যাচ্ছে, দেয়ালের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে, দেয়ালের কয়েকটা ইট ফেটে ঘন সবুজ লতাপাতা বেরিয়ে আসছে। চোখের নিমেষেই বাড়িটা ম্রিয়মাণ হয়ে একলা দাঁড়িয়ে আছে। সম্পূর্ণ একলা। দোতলা বাড়িটার ওপর তলাটা ভেঙে নুয়ে আছে। ওপর তলাতেই আমরা থাকতাম। এখন লতায় পাতায় আষ্টেপৃষ্ঠে রেখেছে। আর নিচতলায় থাকতেন সেই কাকিরা। কাকার দ্বিতীয় স্ত্রী বরিশালের মেয়ে ছিলেন। প্রচণ্ড রূপবতী। কাকা তাকে এই রূপের গুণেই বিয়ে করেছিলেন। এসএসসিতে বোর্ড স্ট্যান্ড করা কাকির কাঁধে পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার ভার পড়েছিল। সরকারি চাকরিজীবী পাত্রকে হাতছাড়া করতে চাননি তার পিতামাতা। পুত্র সন্তান জন্ম দেবার দায় নিয়ে সতীনের সংসার করতে আসা কাকি সেদিন কি জানতেন একদিন এই নিচতলার ঘর থেকে হিড় হিড় করে টেনে বার করতে হবে তার স্বামী পুরুষটিকে অন্য এক নারীর সাথে! নাম না জানা সেই নারীটির কাছেও কি কাকার পুত্র সন্তানের দাবি ছিল? সেদিন সারাদিন না খেয়ে কেঁদে-কেটে চোখ ফুলিয়ে কাকি তার ধবধবে সাদা মুখটাকে রক্তজবা করে তুলেছিলেন। মা সন্ধ্যার দিকে জোর করে তাকে কিছু খাইয়েছিলেন। আজ তারা কোথায়?
দোতলা বাড়িটার পাশে ঘেঁষেই একটা পুকুর। পাড়ে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিল কেউ। সে কি রুমী! আমাকে প্রথম প্রেম নিবেদন করা ছেলেটি। আমাকে চিঠি দেওয়ার অপরাধে মা ওকে চড় মেরেছিল। ওর মায়ের কাছে নালিশ জানিয়েছিল। ওর সদ্য গোঁফ ওঠা গালটা লাল হয়ে উঠেছিল। রাগে না লজ্জায়! জানি না। সেদিনের পর ওকে আর আমার স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখিনি। তবে সেদিন ওর জন্য আমার কোনো খারাপ লাগা ছিল না বরং চড়টা মারাতে খুশিই হয়েছিলাম বোধহয়। আজ কেমন যেন একটা ব্যথা অনুভব করলাম ওর জন্য। পুরুষের প্রতি প্রেম, কামনা, আকাঙ্ক্ষা অনেকদিন আগে থেকেই যেন আর অনুভব করি না। শরীর মন কোথাও থেকে কোনো সাড়া পাই না যেন। অথচ আজ এই গোধূলিতে যখন অন্ধকার একটু একটু করে আমাদের সেই দোতলার ভাড়া বাড়িটা ঘিরে নিচ্ছে, সেই নিয়ন আলোয় আমাকে প্রথম প্রেম নিবেদন করা পুরুষটিকে আমার চুমু খেতে ইচ্ছে করছে। মনে মনে চাইছিলাম সে আমাকে জাপটে ধরে সজোরে চুমু দিক। আমার প্রথম প্রেমিক পুরুষের কাল্পনিক সে স্পর্শ মিলিয়ে যাচ্ছে, মিশে যাচ্ছে সন্ধ্যার অন্ধকারে।
এখন রাত। ফিরছিলাম কী যাচ্ছিলাম! বাসস্ট্যান্ডে অসম্ভব রকমের চিৎকার চেচামেচি, হইচই। শুধু আমাদের দোতলা ভাঙা বাড়িটা একলা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাচ্ছে তেরো বছরের এক কিশোরী। ছাদের কার্নিশের কোল ঘেঁষে যে পানির ট্যাংকটা দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে টুক করে উঠে বসলো সে। পা দুলিয়ে দুলিয়ে কিশোরী কন্যা গান করছে ‘আজ ধানের ক্ষেতের রৌদ্র ছায়ার লুকোচুরি খেলা/ও ভাই লুকোচুরি খেলা।’
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…