Categories: Bangladesh News

অল্প আওয়াজে কেঁপে কেঁপে ওঠে যে শিশু


২০ আগস্টের পরে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু হেলিকপ্টার দেখা যায়। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ইভানা দ্রুত মায়ের কাছে গিয়ে জানতে চায়— জানালা কি বন্ধ আছে, গুলি ঢুকে যাবে? ঝড়ো হাওয়ায় দরজা শব্দ করে বন্ধ হলেই ৬ বছরের পিয়া চিৎকার দিতে থাকে। কোনও কথা না, কেবল চিৎকার। মা-বাবা হিমশিম খায় তাকে বুঝাতে যে, ‘কিছু হয়নি, এটা বাতাস।’

স্কুলে যাওয়ার পথে লেকরোড রোজ বন্ধ দেখে ৮ বছরের ঋষি বলে, ‘এই রাস্তায় কি এখনও কারফিউ চলে!’ একমাস আগেও এসব শব্দ সে শেখেনি, শব্দের মানে বুঝাতো দূরের কথা।

সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সেখান থেকে সৃষ্ট সহিংসতা নিয়ে বাড়ির বড়দের আলোচনা থেকে শিশুরা যে শব্দগুলো শিখেছে তার মধ্যে গুলি, কারফিউ, ভয়, নিষেধ এগুলো নিয়ে মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সেই ভয় থেকে তার চলাফেরায় প্রভাব থাকা স্বাভাবিক বলছেন মানসিক চিকিৎসকরা। এরকম মুহূর্তে শিশুর সঙ্গে তার মতো করে অভয় বাণী দেওয়া এবং বেশি বেশি নিরাপদ বোধ তৈরি করার দায়িত্ব অভিভাবকসহ আশেপাশের মানুষের।

দেশে অস্থিরতা দেখা দিলে, সহিংসতার বিস্তার হলে নানা ধরনের অনিশ্চয়তার জন্ম হয়। এর প্রভাব শিশুদের ওপর পড়ে, সেটা যেন সবার নজর এড়িয়ে যায়। এমন সময়ে কীভাবে নিজেদের সন্তানদের সহায়তা করা যায়, তা বোঝাটা বাবা-মায়ের জন্য অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, তারা নিজেরাও ট্রামর মধ্যে থাকেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরকম সময়ে শিশুকে নিরাপদ রাখতে শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা এবং নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে হবে তাকে। ছোট শিশুদের জন্য (১০ বছরের কম বয়সী) যেকোনও পরিস্থিতি ছোট করে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা জরুরি। ‘ও কী বুঝে’— এরকম মানসিকতা থেকে বের হয়ে ও যা বুঝছে, সেটা ঠিক আছে কিনা, সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। তার সঙ্গে স্পষ্ট ও কোমল ভাষা ব্যবহার করুন। বাইরে কী ঘটছে জানতে চাইলে, কিছু না বলে এড়িয়ে না গিয়ে বলা দরকার— বাইরে কিছু মানুষ দুষ্টুদের ওপর রেগে গেছে, রাগ কমলে আমরা বের হবো।

এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) কিছু ‍গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছে। তারা বলছে, এসময় একসঙ্গে থাকাটা খুব জরুরি। দীর্ঘ সময় শিশু যেন অভিভাবকের কাছ থেকে দূরে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুর কাছ থেকে পরিস্থিতি লুকানোর কিছু নেই। তার মতো করে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। আর অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের জন্য— তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, যতটা সম্ভব অভিভাবককে তার কাছে থাকতে হবে। সন্তানকে একা রাখা যাবে না। শিশু যেন নিজে নিরাপদ বোধ করে।

আন্দোলন চলাকালে ইউনিসেফ তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছিল, ‘দেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় শিশুদের সুস্থতা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সেসময় ইউনিসেফ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে পোস্টে আরও জানায়, ‘বিগত কয়েক দিনে ইউনিসেফ সমর্থিত শিশু হেল্পলাইন ১০৯৮ নম্বরে কল সংখ্যা শতকরা ২৫০ ভাগ বেড়েছে।  একইসঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে শিশুদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করায় ইউনিসেফের প্রশিক্ষিত ৩০০ সমাজকর্মীকে ধন্যবাদও জানায়।

 শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যে কোনও ধরনের পরিবর্তন আসছে কিনা, সেটা খেয়াল করতে হবে। তারা কী ধরনের খেলা খেলছে, বন্ধুদের সঙ্গে আলাপকালে কোন ধরনের শব্দগুলো ব্যবহার করছে। ছাদে বা আশেপাশের খেলার মাঠে গেলে কোথায় যাচ্ছে এবং কখন ফিরবে সেসব নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। একইসঙ্গে তাকে সব সময় আশ্বস্ত করতে হবে। সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে এবং তাকে এই বিশ্বাস দিতে হবে যে, তাকে নিরাপদ রাখতে আপনি সম্ভাব্য সব কিছু করবেন।

আতঙ্ক আতঙ্ক বাড়ায়, সাহস সাহস বাড়ায়। অভিভাবকরা আতঙ্কিত হওয়ায় সেটা শিশুদের মধ্যে প্রবাহিত হয়েছে উল্লেখ করে মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘শিশুরা অভিভাবকদের আতঙ্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে। এই এক মাসে তারা এমন অনেক শব্দ শুনেছে, যেগুলোর সঙ্গে তার নতুন পরিচয় হলো। সে জায়গা থেকে তাকে বের করে আনতে হবে। তাকে তার আগের জায়গা ফিরিয়ে দিতে হবে। দীর্ঘসময় আতঙ্ক নিয়ে ঘরে বসে থাকায়, শিশুর ভয় বেড়েছে। এখন সময় সুযোগ হলেই তাদেরকে বাইরের পরিবেশে নিয়ে স্বাভাবিকীকরণ করতে হবে।’

শিশুদের বিকাশ নিয়ে কাজ করেন ফারহানা মান্নান। তিনি মনে করেন, শিশুদেরকে স্বাভাবিক জায়গায় নিয়ে যেতে হলে আগে অভিভাবকদের নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বড়রা যদি শান্ত হয়, তাদের আচরণে যদি শান্তি বিরাজ করে, তবে শিশু ঠান্ডা হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। বড়রা সরাসরি আলোচনা করে, শিশুর সামনে সিদ্ধান্ত হাজির করে থাকেন। সেটা না করে তাদেরকে পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করা দরকার। লুকানোর কিছু নেই। তাদেরকে বুঝাতে হবে পরিস্থিতি যেটাই হোক, সেটা সামলে নেওয়ার সুযোগ আছে।

আরও পড়ুন:

আন্দোলনের প্রভাব মানসিক স্বাস্থ্যে কতটুকু

‘স্বাভাবিক’ জীবনে ফিরতে সময় লাগবে শিক্ষার্থীদের

শুধু শিক্ষার্থী নয়, ট্রমায় ভুগছেন শিক্ষকরাও 


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

11 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

11 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

11 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

11 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

11 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

11 months ago