শেডের ভেতরে স্থাপন করা রয়েছে ডিজিটাল ওজন মেশিন। ক্রেতাকে তার পছন্দ করা গরুকে সেই মেশিনে উঠিয়ে সরাসরি ওজন মেপে দেখান খামারি মো. হুমায়ূন কবির। এরপর দর অনুযায়ী সেই গরুকে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেন। নেন না ডেলিভারি চার্জও।
হুমায়ূন কবির ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন মোমেনা অ্যাগ্রো নামে তার অর্গানিক ফার্মটি। আর এই ফার্মটির অবস্থান যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের ইস্তা পশ্চিমপাড়ায়। ফার্মে গরু ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু উন্নত জাতের ছাগল। আগামীতে এই ফার্ম আরও বিস্তৃত করার চিন্তা রয়েছে তার।
মোমেনা অ্যাগ্রোতে বর্তমানে দেশি, ক্রস, ফ্রিজিয়ান ও শাহীওয়াল জাতের গাভী ও বাচ্চাসহ ২১টি গরু রয়েছে। আর দেশি, তোতাপুরী, যমুনাপুরী জাতের বাচ্চাসহ ছাগল রয়েছে ১৭টি।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এই বছর হুমায়ূন কবির ১৭টি গরু বিক্রির পরিকল্পনা নিয়ে তা লালনপালন করেছেন। ইতোমধ্যে ১১টি বিক্রি হয়েছে, আর ছয়টি বিক্রির প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অনলাইনে বিক্রির পাশাপাশি তিনি সরাসরিও গরু বিক্রি করেন।
হুমায়ূন কবির জানান, এ বছর তিনি সর্বোচ্চ দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করেছেন, সর্বনিম্ন বিক্রি হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার টাকায়। অন্য যেগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। গরু বিক্রির প্রক্রিয়া ওজনের সঙ্গে সঙ্গে দেখা দামে করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফার্মের আয়তন
ইস্তা গ্রামের ভেতরেই এই ফার্মটি হুমায়ূনের পৈতৃক জমিতে গড়ে তুলেছেন। এক জায়গায় দুই বিঘা জমির মধ্যে ২৫ কাঠায় এই ফার্ম। এখানে একটি আধুনিক শেড নির্মাণ করা হয়েছে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ। শেডসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় আট লাখ টাকা। এরপর প্রথম দফায় ১৪টি গরু শেডে আনা হয়। কিছু দিন পর সেখানে আরও পাঁচটি যুক্ত হয়। প্রায় দুই লাখ টাকা তিনি রাখেন গরুর খাবারের জন্য। সব মিলিয়ে খরচ হয় ২১ লাখ টাকা।
হুমায়ূন জানান, খরচের বেশিরভাগ টাকা দেন তার প্রবাসী ছোট ভাই। কিছু টাকা ছিল তার চাকরিসূত্রে আয়ের।
কী জাতের গরু বা ছাগল রয়েছে
এই অ্যাগ্রোতে দেশি, ক্রস, নেপালি গীর, শাহীওয়াল আর ফ্রিজিয়ান জাতের গরু রয়েছে। এ ছাড়া গরুর শেডের পাশে ভূমি থেকে একটু উঁচুতে বাঁশ, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে শেড বানানো হয়েছে ছাগলের জন্য। সেখানে থাকে দেশি, তোতাপুরী, যমুনাপুরী জাতের বাচ্চাসহ ১৭টি ছাগল। ছাগল কিছু দিন আগে তোলা হয়েছে। সেগুলো এখনও বিক্রি হয়নি।
অর্গানিক কেন
হুমায়ূন কবির বলেন, আমি গরুগুলোকে যেসব খাবার দেই, সেগুলো বাইরে থেকে কেনা নয়। দানাদার খাবারগুলো হলো- ভুট্টা, ধানের কুড়া, বুটের খোসা, সয়াবিন খইল আর খুদ (ভাঙা চাল)। এ ছাড়া কাঁচা ঘাস আর খড়। খাবারের সঙ্গে পানিও মেশাই না। পানি খায় আলাদা। শুকনো খাবার চিবিয়ে খায় গরুগুলো। খুদ বা ভুট্টা কোনও কিছু সিদ্ধ করি না। যেহেতু প্রাকৃতিক খাবার দেওয়া হয়, সে কারণে এটি অর্গানিক বলছি। কোনও প্রসেস ফুড এখানে ব্যবহার করা হয় না।
তিনি বলেন, খড়ে যেহেতু কোনও পুষ্টিগুণ নেই, কিন্তু গরুর পেট ভরাতে ও জাবর কাটানোর জন্য এই খড় ব্যবহার হয়। আমি ইউএমএস (ইউরিয়া, মোলোসেস অ্যান্ড স্ট্র) প্রক্রিয়া করে গরুকে খাওয়াই। সেক্ষেত্রে ১০০ কেজি ইউএমএস তৈরিতে ৮২ কেজি খড়ের সঙ্গে ১৫ কেজি পাতলা গুড় (চিটা গুড়) এবং তিন কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করা হয়। গরুর জাবর কাটলে তার খাবার হজমে সহায়তা হয়, গরুর ফ্যাট কমায়। ইউরিয়া গরুর পেটের গ্যাস নিঃসরণে ভূমিকা রাখে, যেহেতু এসব গরু ঘরের ভেতরেই থাকে, চলাচল করে না, সে কারণে তাদের পেটে গ্যাস হয়। আর গুড়ের তো আলাদা পুষ্টিগুণ রয়েছেই।
তিনি জানান, যেহেতু শুধু খড়ে কোনও পুষ্টি নেই, সে কারণে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই মিশ্রণের ফলে খড় প্রোটিনসমৃদ্ধ হয়।
অনলাইনে বিক্রি
অনলাইনে গরু বিক্রির জন্য তিনি ফেসবুকে একটি পেজ করেছেন। সেখানে ফার্মের গরুর ছবি আপলোড এবং বুস্টিং করা হয়। গরুর বয়স বিশেষ করে কয়টি দাঁত সেগুলো উল্লেখ করা হয়। সেই পেজ দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর লাইভে গরুর ওজন দেখে দামদর অনুযায়ী সেগুলোর অর্ডার দেন। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হলেও বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে গত বছরের জুলাই থেকে। এখন পর্যন্ত ২০টি গরু বিক্রি করেছেন হুমায়ূন। যার মধ্যে ৯টি গরু অনলাইনে পছন্দ করেছেন ক্রেতারা। আর ক্রেতাদের সবাই ঢাকার বাসিন্দা। যার মধ্যে কয়েকজন তার পূর্বপরিচিত এবং কিছু নতুন কাস্টমার। ওজন হিসেবে যারা কেনেন, তাদের জন্য প্রথমদিকে ছিল ৪৯০ টাকা কেজি, এখন ৫০০ টাকা করে। গত বছর প্রথম যে গরুটি বিক্রি করা হয়েছিল, সেটির ওজন ছিল ৩৭৫ কেজি।
অনলাইনে কিনতে হলে ক্রেতাকে দামের ৫০ শতাংশ প্রথমে পে করতে হয়। সেক্ষেত্রে ফার্মের নামে একটি অ্যাকাউন্ট করা রয়েছে। আর বাকি ৫০ শতাংশ গরু নেওয়ার সময়। পরিচিতদের কাছ থেকে পেমেন্ট সরাসরিও তিনি নিয়েছেন। আর অনলাইনে যারা কেনেন, তাদের জন্য ডেলিভারি চার্জ ফ্রি।
গরুপ্রতি খরচ কেমন
হুমায়ূন তার লিজ নেওয়া জমিতে ঘাস চাষ করেন। গ্রাম থেকেই সংগ্রহ করেন ভুট্টা, চালের খুদ, ধানের কুড়া, বুটের খোসা, খেজুরের গুড় আর খড়। বাজার থেকে কেনেন সয়াবিনের খইল আর ইউরিয়া। এসব খাবারের জন্যে ৩০০ কেজি ওজনের একটা গরুর পেছনে মাসে খরচ প্রায় আট হাজার টাকা বলে জানান তিনি।
ভবিষ্যৎ ইচ্ছে
২১ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায় নামা হুমায়ূন কবির বলেন, পরে আরও ১০ লাখ টাকা ইনভেস্ট (বিনিয়োগ) করা হয়েছে। ইচ্ছে আছে দুই বিঘার জমির পুরোটাই এবার ফার্মের অধীনে আনার। এ ছাড়া মাঠে ২২ শতক জায়গা নেওয়া হয়েছে, সেখানে একটা মুরগির ফার্ম করা হবে। আস্তে আস্তে মাছের ঘেরও করবো।
গরু পালনে তেমন ঝক্কি নেই বলে জানান হুমায়ূন। শুধু ১৫ দিন অন্তর শেডটি জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে প্রধান কাজ। ফার্মের ভেতরের গরু ঘরেই থাকে বেশি সময়। সে কারণে দৌড়াদৌড়ি বা হাঁটাচলা হয় না। আর এ জন্য তাদের মাঝে মধ্যে পেটে গ্যাস হয়। এ জন্য আসাদুজ্জামান নামে একজন স্থানীয় পশু চিকিৎসক নিয়মিত দেখভাল করেন।
পশু চিকিৎসক আসাদুজ্জামান বলেন, ইস্তা গ্রামের হুমায়ূন সাহেব একজন সুশিক্ষিত খামারি। তিনি গরু-ছাগল পালন করেন সঠিক নিয়মে। খাবার-দাবার সবই প্রাকৃতিক। তিনি নিজেই ঘাস ও ভুট্টা উৎপাদন করেন, যেগুলো ওইসব পশু খায়। আমি নিয়মিতই আসি। গরুর পেটের পীড়া ছাড়া মোটা দাগে তেমন কোনও অসুখের চিকিৎসা করা হয়নি।
মো. হুমায়ূন কবির (৪০) ঢাকার একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করে ঢাকা মহানগর কলেজে চাকরি করতেন। কিন্তু কিছুতেই চাকরিতে মনোনিবেশ করতে পারতেন না। চাকরির ৭ বছর পর গ্রামে ফেরেন। মাথার ভেতরে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। নিজে পরের চাকরি করবেন না। বরং তার কর্মস্থলে যেন আরও কয়েকজন কাজ করতে পারে, সেই চিন্তা থেকে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।পশুপালনের পরে গ্রহণ করেছেন প্রশিক্ষণ। ভাইদের সহায়তায় গড়ে তোলেন নিজের মায়ের নামে এই ফার্মটি। যেখানে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন তিনি, আর সঙ্গে আরও দুই কর্মচারী। দিনশেষে খরচ-খরচা বাদে ভালোই রয়েছেন জানান এই নতুন উদ্যোক্তা। আগামীতে তার এই প্রতিষ্ঠান আরও বড় হবে এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…