Categories: Bangladesh News

অতীতের মতো একরকম ঢালাও মামলা দিয়ে কি বিচার হবে?


বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহতের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে তা নিয়ে এর মধ্যেই নানা ধরনের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে যেভাবে ঢালাওভাবে বিভিন্ন মামলায় বিএনপির নেতাকর্মী এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে সেই চর্চা এখনো চলছে বলে প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা।

সরকার বিরোধী আন্দোলন চলার সময় মৃত্যুর সংখ্যা জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী অন্তত ৬৫০ জন। যদিও ওই সময় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মৃত্যুর সংখ্যা এখনো বাড়ছে।

কোটা আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে জুলাই-অগাস্ট মাসে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তাকে ‘জুলাই গণহত্যা’ নামে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

কিন্তু এসব মৃত্যুর ঘটনায় যেসব হত্যা মামলা হয়েছে দেখা যাচ্ছে সেগুলোর এজাহারের ধরন প্রায় একই রকমের। একইসঙ্গে ঢালাওভাবে নাম উল্লেখ করে অসংখ্য আসামির পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মামলাতেই অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজার আসামি করা হয়েছে।

ফলে এসব মামলা প্রমাণ করে বিচার কতটা নিশ্চিত করা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের। এছাড়া এসব মামলার তদন্ত নিয়েও শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

‘ফৌজদারি মামলায় এফআইআর বাইবেল’

আইনজীবীরা বলছেন, ফৌজদারি মামলায় এফআইআর বা এজাহারকে মামলার মৌলিক ভিত্তি বলে মনে করা হয়। এর কোন শব্দ পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু সংশোধিত এজাহার বলে কিছু নেই। এটি বিচারে গ্রহণযোগ্য হয় না।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এজাহার একবারই হয়। এগুলো কিছুতেই কোর্টে টিকবে না। তিনি বলেন, ক্রিমিনাল কেইস হলো স্থান, সময় এবং ঘটনা সংঘটনের স্থান। এই তিনটার হেরফের হলে তাহলে আর টেকে না। আর ফৌজদারি মামলায় এফআইআর বাইবেল হিসেবে পরিগণিত হয়। অর্থাৎ এর সামান্য দাড়ি, কমা পরিবর্তন হলে এটা বাদ।

তদন্তে আরও নতুন নতুন তথ্য আসতে পারে জানিয়ে পান্না বলেন, তদন্তে ফারদার তথ্য আসতে পারে। কিন্তু এফআইআর দুইটা হতে পারে না। দুটি হলে এটা ভুয়া বলে প্রমাণিত হওয়ার সুযোগ থাকে। এক মামলায় দুই এফআইআর হতেই পারে না। এর ফলে এসব মামলা আগেই দুর্বল হয়ে যায় বলে মনে করেন পান্না।

সুপ্রিম কোর্টের আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক মনে করছেন, এ ধরনের সংশোধনীর কারণেই মামলা ইতোমধ্যেই আইনগতভাবে দুর্বল হয়ে গেছে। এসব মামলায় বর্তমানে যে মন্ত্রীদের অভিযুক্ত করা হচ্ছে, বিচার করে তাদের দোষী সাব্যস্ত করার সম্ভাবনা খুবই কম, বলেন শাহদীন মালিক।

মামলাগুলো প্রমাণ করা যাবে কি?

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে আন্দোলনের সময় মৃত্যুর ঘটনায় থানায় ও আদালতে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।

এসব হত্যা মামলায় ঢালাওভাবে অনেককে আসামি করা হচ্ছে। নাম উল্লেখ করা ছাড়াও এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকশ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এভাবে ঢালাওভাবে বিভিন্ন মামলায় বিএনপির নেতাকর্মী এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আসামি করার নজির রয়েছে।

ফলে গত কয়েকদিন ধরেই আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীরা এ ধরনের ঢালাও মামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ আমলের মতোই আবারো একই প্যাটার্নে, প্রায় একই ধরনের মামলা করা হচ্ছে।

শাহদীন মালিক বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের দৌড়ের উপর রাখার জন্য এভাবেই মামলা করা হতো। একেকজনের বিরুদ্ধে শ’খানেক মামলাও ছিল। কোনো মামলায় বিচার করে তাদের দোষী প্রমাণ করতে পারেনি। সেসব মামলায় দোষী প্রমাণ করা উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের দৌড়ের উপরে রাখা। উদ্দেশ্য ছিল তাদের ভয়-ভীতি দেখানো, তটস্থ রাখা।

বিচার নিশ্চিতের জন্য ফৌজদারি মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে বলে জানান শাহদীন মালিক।

ফৌজদারি মামলায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে যে ওই ব্যক্তি ওই অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। আমি যে হত্যা করেছি এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে, বলেন শাহদীন মালিক।

তার মতে, একটা হত্যা মামলায় কি ৫০ জন জড়িত থাকতে পারে? এর থেকে আজগুবি, গাঁজাখুরি আর কী হতে পারে? এসব কারণেই মামলা প্রমাণ করা আরো কষ্টসাধ্য হবে।

পুলিশের যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। গত ১৫ বছরে যেভাবে গৎবাঁধা মামলা পুলিশ করেছে তাতে ওই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে যথার্থ ভাবে মামলা করা ও তদন্ত করা তাদের পক্ষে সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নও তুলছেন তারা।

পুলিশের অদক্ষতা, অযোগ্যতা এবং হয়রানি, হেনস্থা করার জন্য গত একযুগ ধরে মামলা হয়েছে। ফলে আইনগতভাবে কীভাবে মামলা করতে হয়, আমার আশঙ্কা বেশিরভাগ পুলিশ তা ভুলেই গেছে” বলেন শাহদীন মালিক। একই সঙ্গে এসব হত্যা মামলায় অতীতের মতোই অসংখ্য আসামি করায় তদন্ত দুরূহ হয়ে পড়বে এবং যথাযথ তদন্ত করা সম্ভব হবে না বলে তিনি মনে করেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

9 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

9 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

9 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

9 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

9 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

9 months ago