Saturday, November 2, 2024

ব্যাংক পরিচালক হতে হলে যেসব যোগ্যতা লাগবে, নতুন পরিপত্র জারি


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম

ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স হবে ৩০ বছর। এছাড়া ব্যাংকের পরিচালক হতে হলে অন্তত ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।  কোনও ব্যক্তির বয়স ১৮  বছর না হওয়া পর্যন্ত তার কোনও কাজের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেওয়া হবে না।

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ গঠন এবং পরিচালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যসংক্রান্ত এক পরিপত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের জারি করা ২৪ পৃষ্ঠার এই নীতিমালায় পরিচালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকের কর্মকাণ্ড প্রধানত আমানতকারীদের অর্থে পরিচালিত হয় এবং এক্ষেত্রে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা অপরিহার্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে— ব্যাংকের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন, ব্যবসায়িক কার্যক্রম যথাযথ ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পেশাগতভাবে দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হওয়া আবশ্যক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইনে অধিকতর সংশোধনী  আনা হয়। এই সংশোধনের ফলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গঠন ও পরিচালকদের দায়িত্ব কর্তব্য যোগ্যতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নতুনভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক পদে নিযুক্ত হওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতা ও উপযুক্ততা নির্ধারণ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে—  সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হতে পারবেন না, কিংবা কোনও জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, বা জড়িত নন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তার সম্পর্কে কোনও দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকতে পারবে না, আর্থিক খাত-সংশ্লিষ্ট কোনও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিধিমালা, প্রবিধান, নীতিমালা বা নিয়মাচার লঙ্ঘনের কারণে দণ্ডিত হওয়া যাবে না।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক হতে আগ্রহী ব্যক্তি এমন কোনও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, যার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে। তার নিজের কিংবা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের জন্য খেলাপি নন।

ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক হতে গেলে অন্য কোনও ব্যাংক-কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি বা তেমন কোম্পানিগুলোর কোনও সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরামর্শক বা অন্য কোনোভাবে লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকা যাবে না। এ ছাড়া তিনি একই ব্যাংক-কোম্পানির বহিঃহিসাব নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক বা অন্য কোনও লাভজনক পদে থাকতে পারবেন না।

পরিচালকের যোগ্যতা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় আরও বলা হয়েছ— তিনি কোনও সময়ে আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হননি, তিনি ব্যক্তিগতভাবে অথবা তার ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কর খেলাপি হতে পারবেন না।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক-কোম্পানিতে কোনও পদে চাকরিরত থাকলে চাকরি অবসায়নের পাঁচ বছর অতিক্রম না হলে, সেই ব্যক্তি ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন না। কোনও ব্যাংক-কোম্পানি কর্তৃক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ এর আওতায় প্রতিষ্ঠিত কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে, সেই তালিকা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর পাঁচ বছর না পেরোলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন না।

স্বতন্ত্র পরিচালকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে এসব শর্ত ছাড়াও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগসংক্রান্ত নীতিমালা পরিপালিত হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ২০ জন। পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ২০ জন হলে স্বতন্ত্র পরিচালক সংখ্যা হবে তিন জন। পর্ষদের পরিচালক সংখ্যা ২০ জনের কম হলে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা হবে দুই জন।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংক কোম্পানির প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় সব পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন। পরবর্তীকালে প্রতিবার্ষিক সাধারণ সভায় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার ধারক পরিচালক, শেয়ার ধারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক এবং স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে গঠিত হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিকল্প পরিচালক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হবেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনও একক পরিবার থেকে তিন জনের বেশি সদস্য একই সময়ে কোনও ব্যাংক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না। পরিচালনা পর্ষদে কোনও একক পরিবারের সদস্যের অতিরিক্ত ওই পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবেন। পরিচালনা পর্ষদের কোনও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে একের বেশি ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হতে পারবেন না। পরিচালনা পর্ষদের কোনও প্রাকৃতিক ব্যক্তি সত্তা বিশিষ্ট ব্যক্তি শেয়ার ধারকের পক্ষে অপর কোনও ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন না। ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখ থেকে কোনও ব্যক্তি কোনও ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক পদে একাধিক্রমে ১২ বছরের বেশি সময় অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles