Saturday, October 12, 2024

গজারিয়ার সুপারবোর্ড কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে, তবে পুরোপুরি নেভেনি


মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সুপার বোর্ড কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে এখনো ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট কাজ করছে। বাকি ছয়টি ইউনিট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরোপুরি আগুন নেভেনি।

রোববার (২৪ মার্চ) দুপুর সোয়া একটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১২ টার পরে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। এখনো ওই প্লাইবোর্ড তৈরির কারখানায় পাটখড়ি থাকায় তার মধ্যে আগুন জ্বলছে। তবে আগুনের লেলিহান শিখা নেই বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের গজারিয়া ইউনিটের স্টেশন অফিসার রিফাত মল্লিক ।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে ১০ টার দিকে রিফাত মল্লিক বলেন, রাতভর চেষ্টায় রাত ১২টার পর আমরা  মোটামুটি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। এখন আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । তবে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট এখনো কাজ করছে। ভিতরে পাটখড়িসহ দাহ্য পদার্থ থাকায় ওগুলোর মধ্যে এখনো অল্প পরিমাণে আগুন জ্বলছে । ওগুলোর স্তুপ ভেঙে ভেঙে আগুন নিভাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, গতকাল রোববার রাত ৮ টার দিকে যখন ঝড় হয় তখন আমরা এই আগুন নিয়ে খুব শঙ্কিত ছিলাম । ঝরে এই আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল । পড়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। আগুনের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনো উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি।

টিকে গ্রুপের পরিচালক মো. শফিউল আতাহার তসলিম জানিয়েছেন, কারখানাটিতে ঠিক কি পরিমাণ মালামাল আছে সেটি তদন্তের পর জানা যাবে। তবে আগুন লাগার এ ঘটনায় বিপুল পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছি।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ঢাকা জোনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালেহ উদ্দিন বলেন, আগুন এখন অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। আগুন আর ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে ৬ টি ইউনিট কাজ করছে। 

তিনি আরও জানান, রোববার দুপুর সোয়া একটার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের সিকিরগাঁও এলাকায় টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানার পাটখড়ি মজুত করে রাখা গোডাউনের ভেতর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শ্রমিক ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কারখানার পাশেই নদীতে পাটখড়ি বোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। একপর্যায়ে কারখানার আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারে পড়ে। এতে পাটখড়িসহ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার তিনটি ভস্মীভূত হয়।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার রাতে বলেন, গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের ৬ টি ইউনিট সম্পূর্ন  আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি বন্ধ না হলেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেই সঙ্গে এ কারখানা থেকে অন্য কোথাও যেন আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সেই দিকেও লক্ষ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখভাল করছে। আগুন কেন, কীভাবে লেগেছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণসহ সব বিষয়ের জন্য মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।

উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, কারখানাটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এ বিষয়ে আমরা একাধিকবার তাদের সতর্ক করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান জানান, আগুন সম্পূর্ণ বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে শুরু করেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে আগুন লেগেছে বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয়েছে জানা যায়নি।



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles